top of page

About Us

IMG-20221127-WA0025_edited.jpg
20160510_095806_edited.jpg

Our 
Story

অনেক দিন ধরেই ভাবনা চিন্তা ছিল, স্কুলের একটা যদি ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়...

সেই ভাবনা থেকেই দানা বাঁধতে বাঁধতে আজকের ওয়েবসাইট তৈরি। যদিও এতে এখনো অনেক কিছু সংযোজন বিয়োজন হতে থাকবে। 

আজ স্বাধীনতা দিবসের শুভ মুহূর্তে এই সাইটেরও যাত্রা শুরু হল।

এর নির্মাণে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।

 

অভিজিৎ ভট্টাচার্য 

প্রধান শিক্ষক

WhatsApp Image 2023-12-12 at 10.20_edite

আমাদের ইশকুলের কথা

একশো বারো বছর আগেকার কথা। এখনকার সঙ্গে তখনকার গড়িয়াহাটের তফাত তোমরা কল্পনাও করতে পারবে না। ধু ধু করছে মাঠ। চাষবাস হচ্ছে এদিক-ওদিক। গ্রামীণ পরিবেশ। বালিগঞ্জ রেলস্টেশনের আশপাশে লোকজন বড়ো একটা থাকে না। রাস্তাঘাট আরও কম।

অথচ কলকাতা বাড়ছে। নতুন বসতি তৈরি হচ্ছে গড়িয়াহাটের কাছপিঠে, কাঁকুলিয়ার মতো পুরোনো পল্লীকে ঘিরে। এইসব নতুন বাসিন্দার মধ্যে লেখাপড়া জানা লোকও আছেন। তাঁদের ছেলেপুলেদের জন্যে এলাকায় কোনো ইশকুল নেই। টনক নড়ল। দেখতে দেখতে চার মাথা এক হল। ইশকুল খুলতে পয়সাকড়ি চাই। জোগান দেবেন কে? মুরলীধর বন্দ্যোপাধ্যায় আর রাজেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ গেলেন এলাকার সম্পন্ন ব্যবসায়ী জগদ্বন্ধু রায়ের মোটা থামওয়ালা সিংদরজা দেওয়া বাড়িতে। তাঁকে রাজি করালেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পাওয়া যেতেই হইহই করে চালু হয়ে গেল ইশকুল। আইনজীবী নরেন্দ্রনাথ মিত্রের বাড়ির কয়েকটা ঘর ভাড়া নেওয়া হল। তখনকার মতো সেখানেই বসল লেখাপড়ার পাট। ইশকুলের খাতায় প্রথম নাম উঠল যে বালকের তার নাম শৈলেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। পিতা রাজেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ। ধুতির ওপর ফতুয়া পরে, গায়ে চাদর জড়িয়ে, বাবার হাত ধরে পড়তে এল সে।

এইভাবেই ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ১১ জানুয়ারি আমাদের ইশকুল জগদ্বন্ধু ইনসটিটিউশনের পত্তন হল।

ইশকুল তো হল, এবারে একটা বাড়ি চাই। কতদিন আর ভাড়াবাড়িতে চলে! জগদ্বন্ধু রায় জমির বন্দোবস্ত করলেন, অর্থের অভাব হল না। বালিগঞ্জ স্টেশনের কাছেই বেশ অনেকটা জায়গা জুড়ে ইশকুলের বাড়ি হল। স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি এলেন বিদ্যালয় ভবনের ভিত গাঁথতে। শুধু ক্লাসরুম নয়, দূরদূরান্তের ছাত্রদের থাকার জন্য হোস্টেল হল। মাস্টারমশাইয়ের থাকার জন্য কোয়ার্টার হল। কাছেপিঠের ছেলেরা পায়ে হেঁটেই ইশকুলে চলে এল। কেউ কেউ এল ট্রেনে চেপে।

এমনি করেই চলছিল। কিন্তু বাদ সাধল ক্যালকাটা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট।

কলকাতার ময়লা জল নিষ্কাশনের জন্য বড়ো একটা নর্দমা তৈরির কাজ হাতে নিলেন তাঁরা। আর পড়বি তো পড়, সেই নর্দমার নকশার মধ্যে আমাদের ইশকুল বাড়িও পড়ল। অত সাধের বাড়ি ক বছরের মধ্যেই ভাঙা পড়ল! তা বলে হাল ছেড়ে বসে ছিলেন না আমাদের ইশকুলের অভিভাবকরা। তাঁরা ক্যালকাটা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে বিহিত চাইতে আদালতে গেলেন, মামলা লড়লেন এবং মামলায় জিতলেন। জজসাহেবের রায় মেনে ক্যালকাটা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট আমাদের ইশকুলের জন্য নতুন বাড়ি বানিয়ে দিল ২৫ নং ফার্ন রোডের ওপর প্রায় দু বিঘে জমির ওপর। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে মাথা তোলা সেই বাড়িটাই আমাদের ঠিকানা। আমাদের ইশকুলের সামনে যে ক্লক-টাওয়ার, তার ঠিক নিচে, গাড়িবারান্দার পাশে থামের গায়ে এখনও আছে সেই বাড়ির ফাউন্ডেশন স্টোন। আর আমাদের সেই পুরোনো বাড়ি, যেটা ভাঙা পড়েছিল, তার ওপর দিয়ে চলে গিয়েছে আজকের রাসবিহারী অ্যাভেনিউ। কর্নফিল্ড রোড-একডালিয়া রোডের সামনে যেখানে ফুট-ওভারব্রিজ হয়েছে, ওইখানটায় ছিল সেই পুরোনো বাড়ি। কেউ ছবি তুলে রাখেনি। রাখলে তোমাদের দেখাতে পারতাম।

তার পর থেকে যত দিন গিয়েছে তত নামডাক ছড়িয়েছে আমাদের ইশকুলের। এলাকার সবাই ছেলেদের এখানেই পড়াতে চায়। পাল্লা দিয়ে বড়ো হয়েছে আমাদের ইশকুল বাড়ি। এখনও হচ্ছে। বড়ো খেলার মাঠটাকে মাঝখানে রেখে দিনে-দিনে অর্ধচন্দ্রাকার চেহারা নিয়েছে। এক সময় টেকনিক্যাল এডুকেশনের খুব চল হয়েছিল দেশে। তখন মডেল স্কুলের তকমা পেয়েছিল জগদ্বন্ধু ইনসটিটিউশন। দেশের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এসেছিলেন আমাদের প্রাঙ্গণে।

 

কীভাবে ইশকুল চলে

জগদ্বন্ধু ইনসটিটিউশনের মতো বড়ো একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সফলভাবে চালানোর জন্য যেমন ছাত্র চাই, অভিভাবক চাই, তেমনই চাই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দরাজ সাহায্য। কোনোটা থেকেই কোনোদিন বঞ্চিত হইনি আমরা। এখনও হই না। আর ইশকুলের রোজকার কাজ সামলানোর জন্য দরকার পরিচালন সমিতি। এই পরিচালন সমিতির সঙ্গে বহু বিদ্যানুরাগী মানুষ জড়িয়ে থেকেছেন। জগদ্বন্ধু রায়ের পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের সদস্যরাও এই কাজে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থেকেছেন। এঁদের মধ্যে রমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সম্পাদকের পদ অলংকৃত করেছেন তিনি।

প্রাইভেট স্কুল হিসেবেই চালু হয়েছিল জগদ্বন্ধু ইনসটিটিউশন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে আমাদের ইশকুল রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতরের আওতায় চলে আসে এবং গ্রান্ট-ইন-এইড স্কুলের মর্যাদা পায়। বর্তমানে এটি গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড স্কুলের তকমা পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অনুমোদন আছে আমাদের।

এখন কত ছেলে আমাদের ইশকুলে পড়ে জানো? প্রায় দু হাজার!

 

জীবন গড়েন যাঁরা

আমাদের ইশকুলের প্রথম প্রধানশিক্ষক ছিলেন বেচারাম নন্দী। তার পর থেকে এত মানুষ গড়ার কারিগর আমাদের প্রাঙ্গণে এসেছেন যে গুণে শেষ করা যাবে না।

এঁদের মধ্যে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে প্রাক্তন প্রধানশিক্ষক উপেন্দ্রনাথ দত্তের নাম। জাতীয় শিক্ষকের বিরল সম্মানে ভূষিত হয়েছেন উপেন্দ্রনাথ। ওঁর হাতে সম্মান তুলে দিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। পরবর্তীকালে আমাদের ইশকুলের রেক্টর পদে বৃত হয়েছিলেন উপেন্দ্রনাথ। দুজন বিশিষ্ট ভাষাবিদ আমাদের শিক্ষক ছিলেন। এঁদের মধ্যে নারায়ণ দাসবসুর খ্যাতি ছিল বৈয়াকরণ হিসেবে, আর জ্যোতিভূষণ চাকীর খ্যাতি অভিধানকার হিসেবে। আমাদের বিদ্যালয়সঙ্গীত ‘হৃদয় ভরে আলোর গানে মোদের বিদ্যালয়’ জ্যোতিভূষণের সৃষ্টি। দুজন বিশিষ্ট শিল্পী আমাদের ছেলেদের নন্দনলোকে দীক্ষা দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে সোমনাথ হোড় একাধারে চিত্রকর ভাস্কর ও ছাপাই ছবির ওস্তাদ ছিলেন। শ্যামল দত্তরায়ের সিদ্ধি ছিল জলরঙের ছবিতে।

 

সোনার ছেলে

ইশকুলের পুরোনো ছাত্রদের এক কথায় বলে প্রাক্তনী। গেল ১১১ বছরে আমাদের ইশকুল যে কত হাজার হাজার ছেলেকে মানুষ করেছে তার একটা হিসেব ইশকুলের খাতায় আছে। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ দেশ ও দশের মুখ রেখেছে। শুধু লেখাপড়ায় নয়, সমাজ ও সংস্কৃতির নানান ক্ষেত্রে গভীর রেখাপাত করেছে। এঁদের কয়েকজনের সঙ্গে তোমাদের আলাপ করিয়ে দিই।

প্রথমেই বলি হিরণ্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। আমাদের ইশকুলের অন্যতম পুরোধা মুরলীধর বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই গুণবান পুত্র আমাদের একেবারে গোড়ার দিককার ছাত্র। বড়ো হয়ে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের কৃতী সদস্য হয়েছিলেন হিরণ্ময়। ১৯৪৭-এর দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা লক্ষ লক্ষ বাস্তুহারা মানুষ যখন পশ্চিমবঙ্গে মাথা গুঁজবার জায়গা খুঁজছেন, তখন ঐ বিপুল পুনর্বাসন প্রকল্পের প্রধান ছিলেন হিরণ্ময়। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে তাঁকেই ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য মনোনীত করা হয়। এককালে সাহিত্যিক হিসেবে খুব নামডাক ছিল আমাদের প্রাক্তনী গজেন্দ্রকুমার মিত্রের। তাঁর ‘কলকাতার কাছেই’, ‘কান্তা প্রেম’ আজও পাঠককুলে সমাদর পায়। পরবর্তীকালে বন্ধু সুমথনাথ ঘোষকে নিয়ে মিত্র ও ঘোষ প্রকাশনা সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন গজেন্দ্রকুমার। সুমথনাথও আমাদের প্রাক্তনী। বাংলা আধুনিক গানের সূচনাপর্বে সবাই জগন্ময় মিত্রের নাম করতেন। ‘তুমি কি এখন দেখিছ স্বপন আমারে’, ‘আমি দুরন্ত বৈশাখী ঝড়’, ‘চিঠি’ এমন অসংখ্য স্মরণীয় গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের প্রাক্তনী জগন্ময়ের গলা। আধুনিক বাংলা গান তো বটেই, বাংলা ছায়াছবির গানের গীতিকার হিসেবেও খুব নাম করেছিলেন আমাদের প্রাক্তনী গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার। ‘আমার গানের স্বরলিপি লেখা রবে’ ওঁর একটি কালজয়ী রচনা। সত্যজিৎ রায়ের ‘সোনার কেল্লা’ বা ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ দেখেছো তো? এসব জনপ্রিয় ছায়াছবিতে জটায়ুর ভূমিকার অভিনেতা সন্তোষ দত্ত আমাদের প্রাক্তনী। ঐতিহাসিক হিসেবে  জগৎজোড়া নাম তপন রায়চৌধুরীর। পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক দিন ধরে পড়িয়েছেন তপন। বড়ো হয়ে ওঁর আত্মজীবনী ‘বাঙালনামা’ তোমরা পোড়ো। আরেক কৃতী প্রাক্তনী তুষারকান্তি তালুককার ছিলেন ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসের সদস্য। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সময়কালে কলকাতার পুলিশ কমিশনার ছিলেন তুষার। সংস্কৃতিবিদ হিসেবে সারা দেশ চেনে আমাদের প্রাক্তনী শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নাট্য ও চলচ্চিত্র সমালোচক হিসেবে তাঁর অবদান স্মরণীয়। দিলীপ কুমার সিংহ কেবলই গণিতশাস্ত্রের ডাকসাইটে পণ্ডিত ছিলেন না, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গড়ে তোলা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদেও বৃত হয়েছিলেন তিনি। খেলাধুলোর জগতে আমাদের অনেক ছেলে নাম করেছে। এঁদের মধ্যে রাজা মুখোপাধ্যায়ের নাম করতেই হয়। রণজি ট্রোফিতে বাংলার হয়ে ক্রিকেট খেলতেন রাজা। শিল্পজগতের নেতৃত্ব দিয়ে সবার সম্ভ্রম অর্জন করেছেন আমাদের আরেক প্রাক্তনী শিবশঙ্কর মুখোপাধ্যায়। ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সদস্য ছিলেন আমাদের প্রাক্তনী অনুপ কুমার চন্দ। এক সময়ে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে কাজ করেছেন অনুপ। বিদ্যাবত্তার জগতে বর্তমানে এক শ্রদ্ধেয় নাম চিন্ময় গুহ। বাংলা, ইংরিজি, ফরাসি ভাষার পণ্ডিত এই বিশিষ্ট প্রাক্তনী এখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরিজি সাহিত্যের অধ্যাপক। এক সময় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বও সামলেছেন।

 

বরণীয় যাঁরা

বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঢুকেই শ্বেতপাথরের দুটি আবক্ষমূর্তি তোমরা দেখতে পাও। একটি আমাদের ইশকুলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক জগদ্বন্ধু রায়ের। অন্যটি স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের। আগে বলেছি, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন আশুতোষ। প্রাক-১৯৪৭ পর্বে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল যুক্তবঙ্গ তথা অসম বিহারের শিক্ষাক্ষেত্রের প্রধান নিয়ামক। আমাদের ইশকুলকে অনুমোদন দেওয়ার পাশাপাশি আমাদের প্রথম বিদ্যালয় ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন আশুতোষ। সেই বাড়িটি নেই, তবে ভিত গাঁথার সেই পাথরটি আজও আমাদের সংগ্রহে আছে। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে আমাদের ইশকুলের বয়স যখন একশো হল, তখন জগদ্বন্ধু ইনসটিটিউশন অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনায় একটি স্মারক ভাস্কর্য আমাদের প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়। এটির রূপায়ণ করেন প্রখ্যাত শিল্পী হিরণ মিত্র।

আর আছে একটি শহিদবেদী। তোমরা জানলে শিহরিত হবে যে আমাদের ছেলেরা দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ১২ ফেব্রুয়ারি আজাদ হিন্দ ফৌজের সৈনিক রশিদ আলির মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদে যে গণ আন্দোলন হয় তাতে স্বতঃস্ফুর্তভাবে যোগ দিয়ে পুলিশের অস্ত্রের আঘাতে প্রাণ দেয় আমাদের দুই প্রাক্তনী মোহিত রায় ও দেবব্রত দাস। শহিদ হবার সময় মোহিতের বয়স ছিল ১৫ বছর, দেবব্রতর মাত্র ১১।

 

গৌরবময় অতীত, সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ

এমন একটি ইশকুলে পড়ছো বলে তোমাদের নিশ্চয়ই খুব গর্ব হচ্ছে। বালিগঞ্জ-গড়িয়াহাট অঞ্চলে বাংলা মাধ্যম ইশকুলগুলির মধ্যে জগদ্বন্ধু ইনসটিটিউশন আজও প্রথম সারিতে। আজও সারা রাজ্যের শিক্ষানুরাগী মানুষ আমাদের ইশকুলের নাম শুনলে শ্রদ্ধায় নত হন।

এখন আমাদের প্রধানশিক্ষক অভিজিৎ ভট্টাচার্য। প্রাতঃবিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক রজত ঘোষ। প্রায় দু হাজার ছেলে পড়ে আমাদের ইশকুলে। পড়ান প্রায় ষাটজন শিক্ষক-শিক্ষিকা। গ্রন্থাগারিক, শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে আরও প্রায় দশজন জড়িয়ে থাকেন ইশকুলের সঙ্গে। এমনকি পাশ করে যাওয়া ছেলেরাও জগদ্বন্ধু ইনসটিটিউসন অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করে ইশকুলের ভালোয়-মন্দয় থাকে। এখানে তাদের দফতরও আছে।

তোমরা আমাদের বর্তমান। তোমাদের হাতে আছে আমাদের ইশকুলের ভবিষ্যৎ। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হয়ে উঠে পরিবার সমাজ ও দেশের সেবায় তোমরা নিজেদের উজাড় করে দেবে এই আমাদের কামনা।

 

ঐতিহ্য

আমাদের ইশকুলের এক বীজমন্ত্র আছে। মনোগ্রামের ওপর সেটা লেখা থাকে। দেখেছো নিশ্চয়ই। আত্মানং বিদ্ধি। মানে, নিজেকে জানো। আমি যে পরমাত্মার সঙ্গে এক ও অভিন্ন – এই বোধ অর্জন করো। জগৎ সংসারের সঙ্গে তুমি যে এক অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা পড়ে আছো, তার টান মর্মে মর্মে অনুভব করো। এই বীজমন্ত্র আমরা পেয়েছি উপনিষদ থেকে।

আমাদের প্রতীক পদ্মফুল। পদ্ম আসলে আত্মবিকাশের প্রতীক। ভোরের বেলার সূর্য উঠলে পদ্ম ফোটে। মনোগ্রামের দিকে ভালো করে নজর করলে দেখবে ওই পদ্মের পটভূমিতে আছে সূর্যালোকের বিভা। আমাদের এই প্রতীক যেন তোমাদের সবাইকে বলছে, ‘তুমি পদ্মের মতো সুন্দর হয়ে ফুটে ওঠো। তোমার আচরণে, তোমার গুণপনায় সকলে মুগ্ধ হোক। তুমি আমাদের সমাজের সম্পদ হয়ে ওঠো।’

১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Headmaster's message

jagadbandhu institution

Donate with PayPal
  • Facebook
  • Instagram
  • X

jagadbandhuinstitution.com

©2025 by Jagadbandhu Institution. 

bottom of page